adorsho praniSheba

জন্মের পর পরই বাছুর কেন মারা যায়?


2020-06-06

service-image


আমাদের দেশের বেশিরভাগ খামারিরই সম্মুখীন হওয়া সাধারণ সমস্যা হলো জন্মের পরে বিভিন্ন কারণে তাদের বাছুর মারা যাওয়া। এই কারণে খামারিরা প্রায়ই ক্ষতির সম্মুখীন হন। তাই আজ আমরা বাছুরের মৃত্যু কেন হয় এবং এ ব্যাপারে কী কী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করবো।

তাহলে চলুন জেনে নেই জন্মের পর পরই বাছুর কেন মারা যায়।

১) গর্ভকালীন সময় গাভীর অপুষ্টি জনিত কারণে।

২) সময়ের পূর্বে বাছুর জন্ম নিলে অথবা অপরিণত বাছুর জন্ম নিলে।

৩) বাছুর জন্মের পর ১৫-৩০ মিনিটের মধ্যে শাল দুধ খাওয়ানো শুরু না করলে এবং ৬ ঘন্টার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমানে শালদুধ না খাওয়ালে বাছুর মারা যেতে পারে।

৪) সময়মত ও পর্যাপ্ত পরিমানে শালদুধ না খাওয়ালে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং বাছুরের সাদা উদরাময় রোগ হয়ে মারা যেতে পারে।

৫) বাছুরের জন্মগত সমস্যা যেমন বিকলাঙ্গতা থাকলে।

৬) বাছুরের সাদা উদরাময় রোগে আক্রান্ত হওয়া ও সুচিকিৎসার অভাব হলে।

৭) গর্ভকালীন অবস্থায় গাভীতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হলে।

৮) বাছুরের শ্বাসকষ্ট ও সুচিকিৎসার অভাবে।

৯) জন্মের পর পর বাছুরের নাকের মিউকাস পরিস্কার না করলে।

১০) গর্ভকালীন অবস্থায় গাভী আঘাত পেলে।

১১) যদি পিচ্ছিল মেঝেতে গাভী পড়ে যায় ও বাছুর আঘাত পায়।

১২) অতিরিক্ত শীত এবং গরমের কারণেও বাছুর জন্মের পর মারা যায়।

১৩) বাছুর প্রসবের সময় যদি প্রসবকালীন কোন জটিলতা দেখা যায় সে ক্ষেত্রেও বাছুর মারা যেতে পারে।

১৪) বাছুরের দেহে বিদেশি উন্নত জাতের (ফ্রিজিয়ান) রক্তের পরিমান ৭৫% ও তার বেশি হলে ও পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা ভুলের কারনে বাছুর মারা যেতে পারে।

সুস্থ বাছুর, সফল খামার

খামারির করণীয়-

১) গর্ভকালীন অবস্থায় গাভীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো।

২) গর্ভবতী গাভীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানিপানের ব্যবস্থা রাখা।

৩) গর্ভবতী গাভীকে আলাদা নিরাপদ জায়গায় রাখা ও জায়গাটি নিয়মিত পরিষ্কার করা। জায়গাটিতে শুকনো খড়ের ব্যবহার করতে হবে যাতে জায়গাটি পিচ্ছিল না হয়ে যায়।

৪) বাছুর জন্মের আগেই গাভী ও বাছুরের জন্য পরিষ্কার ও নিরাপদ জায়গার ব্যবস্থা করা। লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে জায়গাটি কোনোভাবেই পিচ্ছিল না হয়। এজন্য শুকনো খড় ব্যবহার করা যায়।

৫) গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত প্রাণিচিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করানো।

৬) অতিরিক্ত শীত ও গরমের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা (কম্বল বা ফ্যান) নেওয়া।

৭) বাছুর জন্মকালীন সময়ে সতর্কতার সাথে বাছুরের নাকের মিউকাস পরিষ্কার করে দেওয়া। এতে বাছুরের শ্বাস নেওয়া সহজ হয়।

৮) বাছুর জন্মের ১৫-৩০ মিনিটের মধ্যে শালদুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে এবং জন্মের ৬ ঘণ্টার মধ্যে বাছুরের ওজন অনুযায়ী ৩-৬ লিটার দুধ খাওয়ানো উচিত, এতে করে বাছুরকে সাদা উদরাময় রোগ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

৯) সাদা উদরাময় রোগে আক্রান্ত বাছুরের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

যথাযথ গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন প্রস্তুতির মাধ্যমে বাছুরের অকাল মৃত্যুহার অনেকখানি কমিয়ে আনা যেতে পারে। সূর্যমুখী প্রাণিসেবার আগাম বাছুর হবার বার্তার মাধ্যমে একজন খামারি সহজেই সঠিক সময়ে সতর্কতা অবলম্বন করে আসন্ন ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারেন।



adorsho praniSheba